ছবি এঁকে আয়, ছাত্রলীগ নেতার অভিনব দান

বিশেষ প্রতিবেদন:

বাসায় বসে কম্পিউটার গ্রাফিক্সের মাধ্যমে মানুষের ছবি আঁকেন তিনি। তারপর সেই ছবির পারিশ্রমিক তুলে দিচ্ছেন অসহায় শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায়। এমন ভাবেই নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে সাহায্য করে যাচ্ছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী এ জে রাব্বি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। 

বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় টিউশনি করিয়ে নিজের ও পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয়া শিক্ষার্থীরা পড়েছেন সবচেয়ে বেশি বেকায়দায়। একদিকে আত্মসম্মান অপরদিকে ক্ষুধার জ্বালা সবমিলিয়ে অসহায় তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন অসহায় শিক্ষার্থীদের সহায়তায় ভিন্ন আঙ্গিকে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এ জে রাব্বি। 

কম্পিউটার গ্রাফিক্সের মাধ্যমে ভেক্টর ফেইস আর্ট বা লাইন আর্ট ব্যবহার করে ছবি বানিয়ে বিক্রি করছেন তিনি। আর বিক্রি করা টাকা ‘পাবলিক স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন অফ ব্রাহ্মণবাড়িয়া’ এর মাধ্যমে অসহায় শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন।

আসল ছবির সাথে মিল রেখে তৈরি করা হয় প্রতিটি ভেক্টর ফেইস আর্ট

প্রায় ৩ থেকে ৬ ঘন্টা সময় নিয়ে করা এই ডিজিটাল আর্ট করা হয়। এ ছবি যে কোনও আকৃতিতে প্রিন্ট করা যায়; যা কখনো ফাটে না। অনলাইন মার্কেটে এসব ছবির মূল্য ১ হাজার থেকে ৫ হাজার হলেও প্রতিটি ছবি বিক্রি করছেন ২০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। ছবি বিক্রির প্রাপ্ত টাকার ৮০ ভাগ অসহায় মানুষদের জন্য ফান্ডে দান করছেন তিনি। এই কার্যক্রম পুরো রমজান মাস জুড়ে চলবে বলে জানানো হয়। 

ছাত্রলীগের এই নেতার ব্যতিক্রমী উদ্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় প্রশংসা করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। তারা জানান, বর্তমান দুর্যোগে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা যে যেভাবে পারছেন মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। রাব্বি তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষের পাশে দাঁড়ালো। এটা অন্যদের উৎসাহ দিবে। তাঁর থেকে ছবি কিনে তাঁকে উৎসাহ দিতে হবে। 

শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ বলেন, ছাত্রলীগ নেতা রাব্বির উদ্যোগ প্রশংসাজনক। মানুষের জন্য, মানুষের কল্যাণে এসব কাজই সংগঠনকে অনেক দূর এগিয়ে নিবে। 

এমন কাজের অনুপ্রেরণার উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা রাব্বি বলেন, কিছুদিন আগে এক ভিক্ষুকের খবর পেয়েছিলাম। যাঁর জমানো দশ হাজার টাকা তিনি এ সময় দান করে দিয়েছেন। আমারো মনে হচ্ছিল নিজ থেকে কিছু করা দরকার। মূলত সেই চিন্তা থেকে এই প্রজেক্টটি হাতে নিয়েছি। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে একা এ দুর্যোগ মোকাবেলা সম্ভব না। আমি বিশ্বাস করি আমাদের সবাইকে নিজ নিজ যায়গা থেকে কাজ করতে হবে।

সূএ:দৈনিক গ্রাম বাংলা