জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আর আমাদের মাঝে নেই।
- May 15,2020
- 834 views
দেশ বরেণ্য জাতীয় অধ্যাপক ড.আনিসুজ্জামান চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪/৫/২০২০ রোজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫ টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সি এম এইচ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
মৃত্যুর আগে রক্তে সংক্রমণের সঙ্গে নানা জটিলতা নিয়ে গত ২৭ এপ্রিল ৮৩ বছর বয়সী এই অধ্যাপককে রাজধানীর ইউনিভার্সেল কার্ডিয়াক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরবর্তিতে গত ৯ই মে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে রাজধানীর ইউনিভার্সেল কার্ডিয়াক হাসপাতাল থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) এ ভর্তি করা হয়।
সেখানে তার শরীরে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয় বলে আনিসুজ্জামানের ছোট ভাই আক্তারুজ্জামান নিশ্চিত করেছেন।
সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তার চিকিৎসার দায়িত্ব পালন করেন করোনারি কেয়ার ইউনিটের প্রধান কর্নেল সৈয়দা আলেয়া সুলতানার নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের একটি দল।
করোনা ভাইরাস পজিটিভ হওয়াই তার লাশ বাংলা একাডেমিতে নেয়াসহ অন্যান্য কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।
রাতে লাশ মর্গে থাকবে, সকালে পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া হবে।
প্রাথমিকভাবে রাজধানীর আজিমপুরে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের বাবার কবরের পাশে তাকে দাফনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
তবে তা পরিবর্তিত হতে পারে বলে জানানো হয় পরিবারের পক্ষ থেকে।
জাতীয় অধ্যাপকের মৃত্যুতে phnewsbd.com এর পরিবার গভীর শোক প্রকাশ করছে।
জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাটে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা এ টি এম মোয়াজ্জেম ছিলেন বিখ্যাত হোমিও চিকিৎসক। ১৯৫৬ ও ১৯৫৭ সালে স্নাতক সম্মান এবং এমএ-তে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন আনিসুজ্জামান। অনার্সে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ার কৃতিত্বস্বরূপ ‘নীলকান্ত সরকার স্বর্ণপদক’ বৃত্তি লাভ করেন।
১৯৬৫ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। ভাষা আন্দোলন, রবীন্দ্র উচ্ছেদবিরোধী আন্দোলন, রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী আন্দোলন এবং ঐতিহাসিক অসহযোগ আন্দোলনে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ১৯৮৫ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদ, লেখক ও গবেষক, ভাষাসংগ্রামী, মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারী, সংবিধানের অনুবাদক। তার রচনাবলির মধ্যে ‘স্মৃতিপটে সিরাজুদ্দীন হোসেন’, ‘শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ স্মারকগ্রন্থ’, ‘নারীর কথা’, ‘মধুদা, ফতোয়া’, ‘ওগুস্তে ওসাঁর বাংলা-ফারসি শব্দসংগ্রহ’ ও আইন-শব্দকোষ অন্যতম।